Pick Your VISA
মালয়েশিয়া কলিং ভিসা

মালয়েশিয়া কলিং ভিসা 2025: আবেদন প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

মালয়েশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি জনপ্রিয় ও গতিশীল দেশ, তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং ভৌগোলিক গুরুত্বের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এই দেশটি পর্যটক, শিক্ষার্থী, কর্মী এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

তবে, এই বৈচিত্র্যময় প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য মালয়েশিয়া একটি সুগঠিত ও কঠোর অভিবাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে, যা মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ (জাবাতান ইমিগ্রেশেন মালয়েশিয়া, বা JIM) দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ব্যবস্থা ১৯৫৯/৬৩ সালের অভিবাসন আইনের অধীনে কাজ করে, যা বিদেশি নাগরিকদের প্রবেশ, থাকার অনুমতি এবং পাস ইস্যু নিয়ন্ত্রণ করে।

মালয়েশিয়ার ভিসা ব্যবস্থা মূলত দুটি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত:

রেফারেন্স ছাড়া ভিসা (Visa Without Reference, VTR) এবং রেফারেন্স সহ ভিসা (Visa With Reference, VWR)।  VTR সাধারণত স্বল্পমেয়াদি পর্যটন বা সামাজিক ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে কঠোর পূর্ব-যাচাইয়ের প্রয়োজন হয় না। অন্যদিকে, VWR এমন উদ্দেশ্যে প্রযোজ্য যেখানে মালয়েশিয়ার অভ্যন্তরীণ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন, যেমন কর্মসংস্থান, শিক্ষা, বা নির্ভরশীল হিসেবে থাকা।

উল্লেখিত “মালয়েশিয়া কলিং ভিসা” শব্দটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয়, তবে এটি সম্ভবত VWR-এর একটি অনানুষ্ঠানিক উল্লেখ, যেখানে একজন মালয়েশিয়ান স্পনসর—যেমন নিয়োগকর্তা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদেশি নাগরিককে দেশে “ডাকে” বা আমন্ত্রণ জানায়।

দেখুন সংবাদ প্রতিবেদনঃ দেশ টিভি নিউজ

“কলিং ভিসা” (বাংলা অর্থ – রেফারেন্স সহ ভিসা) কী?

রেফারেন্স সহ ভিসা (VWR) হলো একটি বিশেষ ধরনের প্রাক-প্রবেশ ভিসা, যা বিদেশে অবস্থিত মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক মিশন—যেমন দূতাবাস বা কনস্যুলেট—দ্বারা ইস্যু করা হয়। তবে, এই ভিসা পাওয়ার আগে মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ বা অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা, যেমন মালয়েশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (MIDA), এডুকেশন মালয়েশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (EMGS), বা অন্য কোনো সরকারি সংস্থার অনুমোদন আবশ্যক।

এটি VTR থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, কারণ VTR সাধারণত পর্যটকদের জন্য, যারা ১৪, ৩০ বা ৯০ দিনের জন্য মালয়েশিয়ায় অবস্থান করতে চান এবং যাদের পূর্বানুমোদনের প্রয়োজন পড়ে না। VWR-এর ক্ষেত্রে, মালয়েশিয়ায় একজন স্পনসর—যিনি হতে পারেন একজন নিয়োগকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বা পরিবারের সদস্য—প্রক্রিয়াটি শুরু করেন এবং তাদের দায়িত্ব হলো সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন সংগ্রহ করা।

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে, VWR সাধারণত এমপ্লয়মেন্ট পাস (EP), প্রফেশনাল ভিজিট পাস (PVP), বা টেম্পোরারি এমপ্লয়মেন্ট পাস-এর সাথে সংযুক্ত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একজন বাংলাদেশী কর্মী যিনি মালয়েশিয়ার একটি নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ করতে চান, তাকে প্রথমে VWR-এর মাধ্যমে প্রবেশ করতে হবে।

এটি একটি একক প্রবেশের অনুমতি হিসেবে কাজ করে, যার মেয়াদ সাধারণত তিন মাস থাকে। মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর পর, স্পনসর এই ভিসাকে পূর্ণাঙ্গ কাজের পাসে রূপান্তর করে। এই প্রক্রিয়ার কারণে অনেকে এটিকে “মালয়েশিয়া কলিং ভিসা” বলে ডাকেন, কারণ এটি এমন একটি আমন্ত্রণ যা মালয়েশিয়ান সংস্থা বা ব্যক্তি আবেদনকারীকে প্রদান করে।

VWR-এর উদ্দেশ্য ও প্রয়োগের ক্ষেত্র

VWR-এর ব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত, যা মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত এবং সামাজিক লক্ষ্যের সাথে সংযুক্ত। নিচে এর প্রধান উদ্দেশ্যগুলো বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো:

  1. কর্মসংস্থান: মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে বিদেশি দক্ষতা ও শ্রমের চাহিদা পূরণে VWR গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, প্রযুক্তি খাতে একজন ভারতীয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বা নির্মাণ খাতে একজন বাংলাদেশী শ্রমিকের জন্য এটি প্রয়োজন। এটি উৎপাদন, কৃষি, পরিষেবা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
  2. শিক্ষা: মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যেমন ইউনিভার্সিটি মালয়া বা টেইলর’স ইউনিভার্সিটি, আন্তর্জাতিক ছাত্রদের আকর্ষণ করে। একজন বাংলাদেশী ছাত্র যিনি মালয়েশিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান, তাকে EMGS-এর মাধ্যমে VWR সংগ্রহ করতে হবে।
  3. নির্ভরশীলতা: প্রবাসী বা মালয়েশিয়ান নাগরিকদের পরিবারের সদস্য—যেমন স্ত্রী, সন্তান বা বৃদ্ধ পিতামাতা—তাদের সাথে থাকতে VWR ব্যবহার করেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন বাংলাদেশী প্রবাসীর স্ত্রী মালয়েশিয়ায় যোগ দিতে এটির জন্য আবেদন করতে পারেন।
  4. পেশাদারি ভ্রমণ: স্বল্পমেয়াদি প্রকল্পে কাজ করতে আসা পেশাদাররা, যেমন একজন জার্মান পরামর্শদাতা যিনি মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানিতে প্রশিক্ষণ দেবেন, তাদেরও VWR প্রয়োজন।

এই ভিসা নিশ্চিত করে যে শুধুমাত্র যথাযথ উদ্দেশ্য ও স্পনসরশিপসম্পন্ন ব্যক্তিরাই মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেন, যা দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য।

যোগ্যতার বিস্তারিত মানদণ্ড

VWR-এর জন্য যোগ্য হতে হলে আবেদনকারীকে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়, যা নিচে বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হলো:

  • স্পনসরের ভূমিকা: মালয়েশিয়ায় একটি নিবন্ধিত সংস্থা বা ব্যক্তি—যেমন একটি কোম্পানি, বিশ্ববিদ্যালয় বা পরিবারের সদস্য—অভিবাসন বিভাগে আবেদন করবে। উদাহরণস্বরূপ, একটি কোম্পানি যদি একজন বিদেশি প্রকৌশলী নিয়োগ করতে চায়, তাদের প্রথমে MIDA বা অভিবাসন বিভাগের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
  • অনুমোদন পত্র: এটি একটি মূল দলিল, যা আবেদনকারীর নাম, উদ্দেশ্য এবং প্রবেশের বিবরণ উল্লেখ করে। এটি ছাড়া দূতাবাসে ভিসা আবেদন সম্ভব নয়।
  • পাসপোর্টের শর্ত: পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে এবং দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকা বাধ্যতামূলক।
  • উদ্দেশ্য-নির্দিষ্ট যোগ্যতা: কর্মসংস্থানের জন্য, আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে তারা চাকরির জন্য উপযুক্ত—যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা বা কাজের অভিজ্ঞতা। শিক্ষার জন্য, একটি স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে অফার লেটার লাগবে।
  • জাতীয়তার প্রভাব: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের মতো দেশের নাগরিকরা সাধারণত এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন, তবে কিছু দেশের নাগরিকদের উপর নিরাপত্তার কারণে অতিরিক্ত যাচাই প্রক্রিয়া থাকতে পারে।

কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে, মালয়েশিয়ার শ্রম নীতি অনুযায়ী নিয়োগকর্তাকে দেখাতে হবে যে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে পদটি পূরণ করা সম্ভব নয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি তেল শোধনাগারে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হলে বিদেশি কর্মী নিয়োগের যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে হবে।

আবেদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত ধাপ

VWR পাওয়ার প্রক্রিয়া জটিল এবং সমন্বয়ের উপর নির্ভরশীল। ধাপগুলো হলোঃ

1. স্পনসরের আবেদন শুরু:

  • মালয়েশিয়ায় স্পনসর অভিবাসন বিভাগ বা সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে আবেদন জমা দেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি কোম্পানি যদি বাংলাদেশ থেকে ১০ জন শ্রমিক নিয়োগ করতে চায়, তাদের চাকরির বিবরণ, বেতন এবং শ্রমিকদের তথ্য দিতে হবে।
  • এই প্রক্রিয়ায় ২-৮ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে, যা নির্ভর করে কাগজপত্রের সম্পূর্ণতা এবং খাতের কোটার উপর।

2. অনুমোদন পত্র প্রদান:

  • অনুমোদিত হলে, অভিবাসন বিভাগ একটি মূল অনুমোদন পত্র ইস্যু করে, যা আবেদনকারীর কাছে পৌঁছানোর জন্য স্পনসরের দায়িত্ব।

3. দূতাবাসে ভিসা আবেদন:

  • আবেদনকারী নিকটতম মালয়েশিয়ান দূতাবাসে (যেমন ঢাকায়) যান। তারা অনুমোদন পত্র, পাসপোর্ট, ফর্ম এবং ফি (বাংলাদেশীদের জন্য RM ২০) জমা দেন।
  • প্রক্রিয়াকরণে ৩-৭ কার্যদিবস লাগে।

4. ভিসা ইস্যু:

  • VWR পাসপোর্টে স্টিকার হিসেবে লাগানো হয়, যা তিন মাসের মধ্যে একবার প্রবেশের জন্য বৈধ।

5. প্রবেশ ও পাসে রূপান্তর:

  • মালয়েশিয়ায় পৌঁছে, আবেদনকারীকে অস্থায়ী পাস দেওয়া হয়, এবং স্পনসর ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণ পাসের জন্য আবেদন করে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ

  • কাগজপত্র: মূল অনুমোদন পত্র, পাসপোর্ট, ফর্ম, ছবি (৩৫মিমি x ৫০মিমি), ফ্লাইট ইটিনারারি, চাকরির চুক্তি বা অফার লেটার।
  • খরচ: ভিসা ফি (RM ২০-৫০), সার্ভিস ফি এবং স্পনসরের প্রশাসনিক খরচ।

চ্যালেঞ্জ ও সমাধান

  • বিলম্ব: আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সময় বেশি লাগতে পারে।
  • কোটা: নির্দিষ্ট খাতে সীমিত সংখ্যক ভিসা।
  • ভুল তথ্য: “মালয়েশিয়া কলিং ভিসা” নিয়ে বিভ্রান্তি।
  • সমাধান: সঠিক কাগজপত্র ও স্পনসরের সাথে যোগাযোগ।

বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়া কলিং ভিসা গুরুত্ব

মালয়েশিয়া বাংলাদেশী শ্রমিক, ছাত্র এবং প্রবাসীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। “মালয়েশিয়া কলিং ভিসা” বা রেফারেন্স সহ ভিসা (VWR) হলো মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে প্রবেশের একটি প্রধান পথ, যা কর্মসংস্থান, শিক্ষা বা পরিবারের সাথে থাকার জন্য পূর্বানুমোদন নিশ্চিত করে।

বাংলাদেশের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম কারণ মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করেন, যারা দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্সের মাধ্যমে বড় অবদান রাখেন। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ মালয়েশিয়া থেকে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা জিডিপির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।

এই ভিসা ছাড়া বৈধভাবে কাজের জন্য মালয়েশিয়ায় প্রবেশ সম্ভব নয়, তাই এটি বাংলাদেশী শ্রমশক্তির জন্য জীবিকা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার একটি ভিত্তি।

এছাড়া, মালয়েশিয়ার শিক্ষা খাতে বাংলাদেশী ছাত্রদের আকর্ষণ বাড়ছে। প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্র মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান, এবং তাদের জন্যও VWR অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এই মালয়েশিয়া কলিং ভিসা জাতীয় নিরাপত্তা ও শ্রম বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য মালয়েশিয়ার কঠোর নীতির অংশ, যা বাংলাদেশীদের জন্য সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ উভয়ই তৈরি করে।

যাদের জন্য মালয়েশিয়া কলিং ভিসা গুরুত্বপূর্ণ (বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে)

মালয়েশিয়া কলিং ভিসা বিভিন্ন শ্রেণির বাংলাদেশীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নিচে এর প্রধান গ্রুপগুলো উল্লেখ করা হলো:

  1. শ্রমিক: বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকা থেকে আসা অদক্ষ ও আধা-দক্ষ শ্রমিকরা, যারা মালয়েশিয়ার নির্মাণ, কৃষি, উৎপাদন, এবং পরিষেবা খাতে কাজ করেন, তাদের জন্য এই ভিসা জীবনধারণের মূল চাবিকাঠি। উদাহরণস্বরূপ, চট্টগ্রাম বা সিলেটের একজন যুবক যিনি মালয়েশিয়ায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চান, তাকে VWR-এর মাধ্যমে প্রবেশ করতে হবে।
  2. দক্ষ পেশাজীবী: বাংলাদেশের প্রকৌশলী, আইটি পেশাদার বা শিক্ষক যারা মালয়েশিয়ার উচ্চ-দক্ষতার চাকরিতে যোগ দিতে চান, তাদের জন্য এটি এমপ্লয়মেন্ট পাস পাওয়ার প্রথম ধাপ।
  3. ছাত্র: মালয়েশিয়ার সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে বাংলাদেশী ছাত্ররা, বিশেষ করে ঢাকা বা খুলনার শিক্ষার্থীরা, VWR-এর মাধ্যমে সেখানে পড়তে যান। যেমন, একজন ছাত্র যিনি কুয়ালালামপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চান, তার জন্য এটি বাধ্যতামূলক।
  4. নির্ভরশীল পরিবার: মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিক বা পেশাজীবীদের স্ত্রী, সন্তান বা বাবা-মা যারা ডিপেন্ডেন্ট পাসে যোগ দিতে চান, তাদের জন্যও VWR প্রয়োজন।

এই গ্রুপগুলোর জন্য VWR শুধু প্রবেশের অনুমতি নয়, বরং মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে থাকার এবং কাজ বা পড়াশোনা করার আইনি ভিত্তিও প্রদান করে।

খরচের বিস্তারিত (বাংলা টাকায়)

VWR পাওয়ার খরচ বিভিন্ন ধাপে বিভক্ত এবং বাংলাদেশী আবেদনকারীদের জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ । ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত ১ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (RM) প্রায় ২৫ বাংলা টাকার সমান ধরে নিলে খরচ নিচে দেওয়া হলো:

  1. ভিসা ফি: মালয়েশিয়ান দূতাবাসে (ঢাকায়) বাংলাদেশীদের জন্য VWR-এর ফি RM ২০, যা বাংলা টাকায় প্রায় ৫০০ টাকা। এটি সরাসরি দূতাবাসে জমা দিতে হয়।
  2. স্পনসরের খরচ: মালয়েশিয়ায় নিয়োগকর্তা বা এজেন্ট যিনি অভিবাসন বিভাগ থেকে অনুমোদন পত্র সংগ্রহ করেন, তারা সাধারণত RM ৫০০-১০০০ চার্জ করেন। এটি বাংলা টাকায় ১২,৫০০-২৫,০০০ টাকা। শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এজেন্টরা প্রায়ই প্যাকেজ হিসেবে এই খরচ নেন।
  3. এজেন্ট ফি: বাংলাদেশে অনেকে এজেন্টের মাধ্যমে মালয়েশিয়া কলিং ভিসা প্রক্রিয়া করেন। এজেন্টরা সাধারণত ২,০০,০০০-৩,০০,০০০ টাকা নেন, যার মধ্যে কাগজপত্র তৈরি, অনুমোদন পত্র সংগ্রহ এবং দূতাবাসে জমার খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে।এর কম বা বেশিও হতে পারে।
  4. ভ্রমণ খরচ: ঢাকায় মালয়েশিয়ান দূতাবাসে যাওয়া-আসার জন্য গ্রামীণ আবেদনকারীদের ৫০০-১০০০ টাকা পরিবহন খরচ হতে পারে।বা তারও বেশি হতে পারে।
  5. অন্যান্য খরচ: পাসপোর্ট ছবি (২০০-৩০০ টাকা), মেডিকেল টেস্ট (২,০০০-৩,০০০ টাকা), এবং ফ্লাইট টিকিট (৩০,০০০-৪০,০০০ টাকা) আলাদাভাবে যোগ হয়।

মোট খরচ: একজন শ্রমিকের জন্য সর্বনিম্ন খরচ ২,৫০,০০০-৩,৫০,০০০ টাকা হতে পারে, যদি এজেন্টের মাধ্যমে করা হয়। ছাত্রদের জন্য এটি ৫০,০০০-১,০০,০০০ টাকার মধ্যে থাকতে পারে, কারণ তাদের এজেন্টের প্রয়োজন কম। দক্ষ পেশাজীবীদের জন্য খরচ ১,০০,০০০-১,৫০,০০০ টাকা হতে পারে, যা নিয়োগকর্তা প্রায়শই বহন করেন।

আরও পড়ুনঃ কলিং ভিসা এবং কোম্পানি ভিসা কিভাবে যাচাই করবেন?

প্রক্রিয়া ও চ্যালেঞ্জ

VWR পাওয়ার জন্য বাংলাদেশীদের মালয়েশিয়ায় একটি স্পনসর (নিয়োগকর্তা বা বিশ্ববিদ্যালয়) থাকতে হবে, যিনি অভিবাসন বিভাগ থেকে অনুমোদন পত্র সংগ্রহ করেন। এরপর ঢাকার দূতাবাসে আবেদন করতে হয়। প্রক্রিয়াটি ২-৮ সপ্তাহ সময় নেয়। তবে, এজেন্টের প্রতারণা, কোটা সীমাবদ্ধতা, এবং কাগজপত্রে ভুলের কারণে বিলম্ব বা বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়া কলিং ভিসা শ্রমিক, ছাত্র এবং নির্ভরশীলদের জন্য জীবন ও জীবিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও পরিবারগুলোর উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখে। খরচ ৫০,০০০ থেকে ৩,৫০,০০০ টাকার মধ্যে হলেও, এর মাধ্যমে প্রাপ্ত সুযোগ দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক। তবে, সঠিক তথ্য ও পরিকল্পনা এই প্রক্রিয়াকে সফল করতে অপরিহার্য।

Md Mahmud Hasan

A dedicated entrepreneur and SEO strategist. At 'Hasan Hive, Bengal Deal, Pick Your VISA & More,' he helps businesses enhance their online presence and achieve impressive results through innovative digital marketing solutions.

1 comment

Recent posts