ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় (2025) | নতুন নিয়মে দ্রুত ওয়ার্ক ভিসা পাওয়ার ৫টি পরীক্ষিত কৌশল!

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় নিয়ে ভাবছেন? ২০২৫ সালে ইতালি যাওয়া আরও সহজ! জেনে নিন দ্রুত ওয়ার্ক ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়, খরচ, নথি ও সরকারি কোটার আপডেট। ভিসা প্রতারণা এড়ানোর টিপসও থাকছে!

কিভাবে সেখানে যাবেন, কিভাবে কাজ পাবেন, বা পড়াশোনা করবেন? এই স্বপ্ন পূরণের পথটা অনেকের কাছেই অজানা বা কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু বিশ্বাস করুন, সঠিক তথ্য আর একটু চেষ্টার মাধ্যমে এই স্বপ্নটা বাস্তব করা সম্ভব। বিশেষ করে ২০২৫ সাল ইতালিতে কাজের সুযোগের জন্য আরও বেশি সম্ভাবনাময় হতে চলেছে। নতুন নিয়মকানুন এবং কোটা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশিদের জন্য ইতালিতে যাওয়া এখন আগের চেয়েও সহজ হতে পারে। চলুন, সবকিছু বিস্তারিত জেনে নিই!

ওয়ার্ক ভিসা (Decreto Flussi)

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় ও জনপ্রিয় প্রচলিত উপায় হলো ওয়ার্ক ভিসা, যা ‘Decreto Flussi’ নামে পরিচিত। এটা মূলত ইতালীয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত একটি বার্ষিক কোটা সিস্টেম, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সংখ্যক বিদেশি শ্রমিককে ইতালিতে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়।

২০২৫ সালের নতুন আপডেট

২০২৫ সালে ইতালীয় সরকার ১,৬৫,০০০টি ওয়ার্ক ভিসা ইস্যু করার পরিকল্পনা করেছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ১৪,০০০টি বেশি! এর মধ্যে একটি বিশেষ সুসংবাদ হলো, ১০,০০০টি ভিসা কেয়ারগিভারদের জন্য নির্ধারিত। অর্থাৎ, যারা কেয়ারগিভার হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ সুযোগ। এই বর্ধিত কোটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের জন্য একটি বড় স্বস্তির খবর এবং অন্যতম ইতালি যাওয়ার সহজ উপায়।

ওয়ার্ক ভিসার জন্য যোগ্যতা

• চাকরির অফার: ইতালির কোনো নিয়োগকর্তার কাছ থেকে আপনার একটি বৈধ চাকরির অফার থাকতে হবে। এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। নিয়োগকর্তা আপনাকে ইতালিতে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন।
• প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণ: যে পদে আপনি আবেদন করছেন, সেই পদের জন্য আপনার পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। নিয়োগকর্তা আপনার যোগ্যতা যাচাই করবেন।

ওয়ার্ক ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া

১. নিয়োগকর্তা অনলাইনে আবেদন করবেন: আপনার ইতালীয় নিয়োগকর্তা আপনার পক্ষ থেকে ইতালির শ্রম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদন করবেন। এই ধাপটি নিয়োগকর্তার দায়িত্ব।

২. আবেদনকারীকে ডিজিটাল চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে: নিয়োগকর্তার আবেদন অনুমোদিত হলে, আপনাকে একটি ডিজিটাল চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। এটি আপনার এবং নিয়োগকর্তার মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি।

৩. বায়োমেট্রিক ডেটা প্রদান: এরপর আপনাকে ইতালীয় দূতাবাসে বা নির্দিষ্ট ভিসা সেন্টারে গিয়ে আপনার বায়োমেট্রিক ডেটা (আঙুলের ছাপ ও ছবি) প্রদান করতে হবে।

৪. সিদ্ধান্ত: আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ৬০ দিনের মধ্যে আপনার ভিসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এই সময়সীমা সাধারণত মেনে চলা হয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে দেরিও হতে পারে।

EU ব্লু কার্ড (উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবীদের ইতালি যাওয়ার সহজ উপায়)

আপনি যদি উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবী হন এবং ইতালিতে একটি সম্মানজনক ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে EU ব্লু কার্ড আপনার জন্য একটি চমৎকার সুযোগ। ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলির মধ্যে এটি সবচেয়ে সহজ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোতে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন অ-ইউরোপীয় নাগরিকদের কাজ করার সুযোগ দেয়।

EU ব্লু কার্ডের যোগ্যতা

• সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা বা অভিজ্ঞতা: আপনার সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা (যেমন, বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি) অথবা কমপক্ষে ৫ বছরের পেশাদার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
• ইতালির কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরির অফার: আপনার ইতালির কোনো স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এমন একটি চাকরির অফার থাকতে হবে, যেখানে আপনার বেতন ইতালির গড় বেতনের চেয়ে বেশি।

EU ব্লু কার্ডের আবেদন প্রক্রিয়া

১. অনলাইনে আবেদন জমা দিন: আপনাকে অনলাইনে আপনার EU ব্লু কার্ডের জন্য আবেদন জমা দিতে হবে। এই আবেদনপত্রটি খুব সতর্কতার সাথে পূরণ করতে হবে।

২. নিয়োগকর্তার নিশ্চিতকরণ: আপনার আবেদন অনুমোদনের পর নিয়োগকর্তাকে ৭ দিনের মধ্যে আপনার আগ্রহ এবং চাকরির অফারটি নিশ্চিত করতে হবে।

EU ব্লু কার্ড প্রক্রিয়ায় সাধারণত কম সময় লাগে এবং এটি উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবীদের জন্য ইতালিতে দ্রুত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করে এবং ইতালি যাওয়ার সহজ উপায়।

আরও দেখুনঃ মাত্র ৪ লাখ টাকায় ইতালি | কিভাবে ভিসা পেলাম | Italy Visa 2025

সৌজন্যঃ Explore with ROBIN

শিক্ষার্থী ভিসা (পড়াশোনার পাশাপাশি ইতালি যাওয়ার সহজ উপায়)

আপনি যদি ইতালিতে পড়াশোনা করতে আগ্রহী হন, তাহলে শিক্ষার্থী ভিসা আপনার জন্য উপযুক্ত। ইতালির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য কাজের সুযোগও থাকে এবং এটিও ইতালি যাওয়ার সহজ উপায়।

শিক্ষার্থী ভিসার যোগ্যতা

• ইতালির কোনো স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি: আপনাকে ইতালির কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। আপনার ভর্তির অফার লেটার ভিসার জন্য অপরিহার্য।
• আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ: ইতালিতে আপনার পড়াশোনা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বহন করার মতো পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য আপনার আছে, তার প্রমাণ দেখাতে হবে। এটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা স্কলারশিপের প্রমাণ হতে পারে।

শিক্ষার্থী ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া

১. প্রয়োজনীয় নথি প্রস্তুত করুন: ভর্তি চিঠি, আর্থিক প্রমাণ, স্বাস্থ্য বীমা, শিক্ষাগত সনদপত্র এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি প্রস্তুত রাখুন।

২. ইতালির দূতাবাসে আবেদন জমা দিন: বাংলাদেশের ইতালীয় দূতাবাসে আপনার শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আবেদন জমা দিন। সাক্ষাৎকারের জন্য প্রস্তুত থাকুন।

শিক্ষার্থী ভিসা পাওয়ার পর আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট-টাইম কাজ করার সুযোগও পেতে পারেন, যা আপনার খরচ কমাতে সাহায্য করবে।

২০২৫ সালে ইতালি যাওয়ার খরচ (একটি বিস্তারিত চিত্র)

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলি অবলম্বন করে ইতালিতে যাওয়ার মোট খরচ ভিসার ধরন, বিমান ভাড়া, আবাসন এবং জীবনযাত্রার ব্যয় ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। এখানে একটি আনুমানিক খরচের তালিকা দেওয়া হলোঃ

বিশেষ দ্রষ্টব্য: ২০২৫ সালে ১ ইউরো প্রায় ১২৬ টাকা হতে পারে। এই হিসাবটি বর্তমান বিনিময় হার এবং আনুমানিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃত খরচ ভিন্ন হতে পারে। ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলোর ধরনের উপর ভিত্তি করে খরচের পরিমান নির্ভর করে।

দ্রুত ওয়ার্ক ভিসা পাওয়ার ৫টি পরীক্ষিত কৌশল!

ইতালিতে দ্রুত ওয়ার্ক ভিসা পেতে হলে কিছু কৌশল অবলম্বন করা জরুরি।  ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় উপায় গুলি অবলম্বন করে দ্রুত ভিসা পাওয়া যেতে পারে।  ৫টি পরীক্ষিত কৌশল আলোচনা করা হলোঃ

১. সঠিক নিয়োগকর্তা নির্বাচন: দ্রুত ভিসা পেতে হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এমন একজন নিয়োগকর্তা খুঁজে বের করা, যিনি ইতালির শ্রম আইনের সাথে পরিচিত এবং ভিসা প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক। অনেক নিয়োগকর্তা এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেন না, ফলে অনর্থক দেরি হতে পারে। আপনার নিয়োগকর্তা যেন দ্রুত এবং সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করুন।

২. নথি প্রস্তুত রাখুন: ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় সকল নথি (পাসপোর্ট, শিক্ষাগত সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ, আর্থিক প্রমাণ, ইত্যাদি) আগে থেকেই প্রস্তুত রাখুন। একটিও নথি অনুপস্থিত থাকলে আপনার আবেদন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে। প্রতিটি নথির বৈধতা এবং সঠিকতা নিশ্চিত করুন।

৩. সরকারি কোটার সুযোগ নিন: ইতালির সরকার প্রতি বছর ‘Decreto Flussi’ এর অধীনে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ওয়ার্ক ভিসা ইস্যু করে। এই কোটা সাধারণত বছরের নির্দিষ্ট সময়ে খোলা হয় এবং খুব দ্রুত শেষ হয়ে যায়। তাই, যখনই কোটা ঘোষণা করা হয়, তখনই দ্রুত আবেদন করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। এর জন্য নিয়মিত ইতালীয় দূতাবাসের ওয়েবসাইট এবং নির্ভরযোগ্য সংবাদ মাধ্যমের খবর রাখুন।

৪. বিশেষায়িত ভিসার জন্য আবেদন: আপনি যদি কেয়ারগিভার বা উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবী হন (যেমন, আইটি, ইঞ্জিনিয়ারিং), তাহলে আপনার জন্য বিশেষায়িত কোটা বা EU ব্লু কার্ডের সুযোগ থাকতে পারে। এই ধরনের ভিসার জন্য আবেদন প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে দ্রুত হতে পারে, কারণ এই ক্ষেত্রগুলোতে ইতালিতে শ্রমিকের চাহিদা বেশি।

৫. বিশ্বস্ত এজেন্সির সহায়তা: ভিসা প্রক্রিয়া বেশ জটিল হতে পারে। তাই, একটি অভিজ্ঞ এবং বিশ্বস্ত এজেন্সির সহায়তা নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। তারা আপনাকে সঠিক তথ্য দিতে পারে, নথি তৈরিতে সাহায্য করতে পারে এবং আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে, এজেন্সি নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন এবং প্রতারণা এড়ান।

প্রতারণা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ টিপস

ইতালি যাওয়ার স্বপ্নকে কাজে লাগিয়ে অনেক প্রতারক সক্রিয় থাকে তাই ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলোর নানা দিক নিয়ে ভালো ধারনা থাকা জরুরী। এদের থেকে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।

• বিশ্বস্ত এজেন্সি নির্বাচন করুনঃ কোনো এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করার আগে তাদের লাইসেন্স, পূর্বের সফলতার হার এবং গ্রাহকদের রিভিউ ভালোভাবে যাচাই করুন। প্রয়োজনে সরাসরি তাদের অফিসে গিয়ে কথা বলুন।
• নথি যাচাই করুনঃ কোনো নথিতে স্বাক্ষর করার আগে তা ভালোভাবে পড়ে নিন এবং এর সত্যতা যাচাই করুন। কোনো ফাঁকা নথিতে স্বাক্ষর করবেন না।
• আর্থিক লেনদেনে সতর্ক থাকুনঃ ভিসার আগে অতিরিক্ত টাকা চাওয়া বা অস্বাভাবিক অফার থেকে সতর্ক থাকুন। সকল আর্থিক লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে করুন এবং রসিদ সংগ্রহ করুন।
• অতিরিক্ত ভিসার প্রলোভনে পা দেবেন নাঃ কেউ যদি আপনাকে অতিরিক্ত ভিসার প্রলোভন দেখায় বা সরকারি কোটার বাইরে ভিসা দেওয়ার কথা বলে, তাহলে সতর্ক থাকুন। এসব ক্ষেত্রে প্রতারণার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
• পাসপোর্ট অন্যের হাতে দেবেন নাঃ আপনার পাসপোর্ট একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি। এটি কোনো এজেন্সির কাছে বা অন্য কারো কাছে দীর্ঘ সময়ের জন্য জমা দেবেন না।

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলি নিয়ে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)

১. বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫?

২০২৫ সালে বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে ভিসার ধরন অনুযায়ী খরচ ভিন্ন হয়। ওয়ার্ক ভিসার জন্য আনুমানিক ৳৮,০০,০০০ থেকে ৳১৫,০০,০০০ টাকা লাগতে পারে, যেখানে শিক্ষার্থী ভিসার জন্য ৳৪,০০,০০০ থেকে ৳৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। এর সাথে বিমান ভাড়া, আবাসন, খাবার এবং স্বাস্থ্য বীমার খরচ যোগ হয়।

২. ইতালি কৃষি কাজের বেতন কত?

ইতালিতে কৃষি কাজের বেতন সাধারণত প্রতি মাসে ৮০০ ইউরো থেকে ১২০০ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১,০০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা (১ ইউরো = ১২৬ টাকা ধরে)। এটি কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা এবং কর্মঘণ্টার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।

৩. বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে কত ঘন্টা সময় লাগে?

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে সরাসরি ফ্লাইটে প্রায় ৯ থেকে ১০ ঘন্টা সময় লাগে। তবে, যদি কানেক্টিং ফ্লাইট থাকে, তাহলে স্টপওভারের উপর নির্ভর করে মোট সময় ১৮ থেকে ২৪ ঘন্টা বা তারও বেশি লাগতে পারে।

৪. ইতালিতে কোন কোন ভিসা রয়েছে?

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলোর বিভিন্ন ধরনের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে, যার মধ্যে প্রধানগুলো হলোঃ

• ওয়ার্ক ভিসা (Decreto Flussi): কাজের জন্য।
• EU ব্লু কার্ড: উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবীদের জন্য।
• শিক্ষার্থী ভিসা: পড়াশোনার জন্য।
• ফ্যামিলি রিউনিয়ন ভিসা: পরিবারের সদস্যদের সাথে পুনরায় মিলিত হওয়ার জন্য।
• ট্যুরিস্ট ভিসা: ভ্রমণের জন্য।
• স্ব-নিযুক্ত ভিসা: যারা ইতালিতে ব্যবসা শুরু করতে চান।

৫. ইতালিতে অস্থায়ী কাজের ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়?

ইতালিতে অস্থায়ী কাজের ভিসা সাধারণত ‘Decreto Flussi’ পদ্ধতির মাধ্যমে পাওয়া যায়। এর জন্য আপনাকে ইতালির কোনো নিয়োগকর্তার কাছ থেকে একটি চাকরির অফার পেতে হবে। নিয়োগকর্তা আপনার পক্ষে অনলাইনে আবেদন করবেন এবং প্রক্রিয়াটি সফল হলে আপনি অস্থায়ী ওয়ার্ক ভিসা পাবেন। এই ভিসা সাধারণত ১-২ বছরের জন্য ইস্যু করা হয় এবং পরে নবায়ন করা যেতে পারে। ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে সহজ।

৬. ভিসা কত প্রকার, কি কি?

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলো জানার আগে ভিসার ধরন নিয়ে ভালো ধারনা থাকা জরুরী। ভিসা মূলত দুই প্রকারের হয়ঃ

• অভিবাসী ভিসা (Immigrant Visa): এই ভিসা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য দেওয়া হয়, যেমন – ফ্যামিলি রিউনিয়ন ভিসা, কিছু নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ওয়ার্ক ভিসা যা পরবর্তীতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ করে দেয়।
• অন-অভিবাসী ভিসা (Non-Immigrant Visa): এই ভিসা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেওয়া হয় এবং সাধারণত স্থায়ী বসবাসের সুযোগ দেয় না। যেমন – ট্যুরিস্ট ভিসা, শিক্ষার্থী ভিসা, অস্থায়ী ওয়ার্ক ভিসা, বিজনেস ভিসা ইত্যাদি। প্রতিটি প্রকারের ভিসার অধীনে আবার বিভিন্ন উপ-প্রকারভেদ থাকতে পারে, যা ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং সময়কালের উপর নির্ভর করে।

আরও পড়ুনঃ আসুন জেনে নেই ইতালি ভিসা খরচ কমানোর ৭টি কার্যকর উপায় গুলো কি কি

শেষ কথা

ইতালিতে যাওয়াটা এখন আর স্বপ্ন নয়, বরং সঠিক পরিকল্পনা আর প্রচেষ্টার মাধ্যমে এটি একটি বাস্তবতায় রূপ নিতে পারে। ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় গুলো কাজে লাগিয়ে  ২০২৫ সালের নতুন নিয়মকানুন এবং বর্ধিত ওয়ার্ক ভিসার কোটা বাংলাদেশিদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ নিয়ে এসেছে। মনে রাখবেন, প্রতিটি ধাপেই সতর্কতা অবলম্বন করা এবং সঠিক তথ্য যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি। কোনো প্রলোভনে পা না দিয়ে, ধৈর্য ধরে এবং বিশ্বস্ত পথে এগিয়ে যান। আপনার ইতালির স্বপ্ন পূরণ হোক, এই শুভকামনা!

ইতালি যাওয়ার সহজ উপায় এবং আপনার ইতালির স্বপ্ন পূরণের পথে কোনো প্রশ্ন বা অভিজ্ঞতা থাকলে কমেন্ট বক্সে আমাদের জানান! আপনার মতামত আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।